মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কয়েক হাজার পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক হঠাৎ করে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পূর্বের মাসগুলোর তুলনায় তিন থেকে পাঁচ গুণ বেশি বিল পেয়ে হতবাক হয়ে গেছেন সাধারণ মানুষ। প্রতি মাসে যেখানে বিল আসতো ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, সেখানে চলতি মাসে এসেছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। আবার, যাদের মাসিক বিল হতো ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে, তাদের বিল এসেছে ৫০০০ থেকে ৭০০০ টাকা পর্যন্ত।
জেলায় টানা বর্ষণের ফলে এমনিতেই সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে এবং অনেকেই আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে হঠাৎ করে এই ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, গাংনী সাব-জোনাল অফিসে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।
প্রতিকার না পেয়ে বুধবার সকাল ১১টায় ভুক্তভোগী নারী ও পুরুষরা গাংনী বাজারে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে তারা জানান, সমস্যা সমাধান না হলে তারা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করবেন।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কিছু অসাধু কর্মকর্তার অবহেলা, অনিয়ম, দুর্নীতি এবং ঘরে বসে অনুমাননির্ভর মিটার রিডিং করার কারণেই এ ভুতুড়ে বিল এসেছে।
স্থানীয় গ্রাহক আহাম্মেদ আলী বলেন, প্রতি মাসে যেখানে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বিল আসতো, সেখানে এবার এসেছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। আবার আগে যাদের দেড়-দুই হাজার টাকা বিল হতো, তারা এবার ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা বিল হাতে পেয়েছেন।
একই দাবি করে জাহান্নারা খাতুন বলেন, গত জুলাই মাসে আমার বিল ছিল ৫০০ টাকা, আর আগস্টে হয়েছে ২০০০ টাকারও বেশি। শুধু আমি না, পুরো গ্রামের শত শত মানুষের একই অবস্থা।
ভুতুড়ে বিল সংশোধনের দাবি জানিয়ে আরেক ভুক্তভোগী মারফত আলী বলেন, খেটে খাওয়া মানুষগুলো সঠিক বিল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে। তার ওপর এমন অস্বাভাবিক বিল পেয়ে আমরা দিশেহারা। এটা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের খামখেয়ালিপনার ফল।
সাহারবাটিয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক বলেন, পূর্বের মাসগুলোর তুলনায় তিন থেকে পাঁচ গুণ বিল এসেছে। এলাকাবাসী মানববন্ধনের মাধ্যমে এর প্রতিকার চেয়েছে। যদি এর সমাধান না হয়, তাহলে আমরা বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করব।
এ বিষয়ে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গাংনী জোনাল অফিসের ডিজিএম বিজয় চন্দ্র কুন্ডু বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। সার্বিক তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে